প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুবশক্তিই পারে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে। বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়ে আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মানবিকতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি- যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্য দিয়ে যুব সমাজের সংগ্রামী চেতনার ধারা আরো শাণিত ও বেগবান হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ দেশের যুবদের বুকে অদম্য শক্তির যে বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে গেছেন, যে প্রেরণা তিনি যুগিয়ে গিয়েছেন, সেই প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে যুবলীগ এ দেশের যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে- এ প্রত্যাশা করি।

আজ ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ সকল যুবলীগ নেতা-কর্মীকে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার বলিষ্ঠ, গতিশীল, সাহসী ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি নিজস্ব জাতি রাষ্ট্র ও গর্বিত আত্মপরিচয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে যুবশক্তির উন্মেষ ঘটেছিল, সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত স্বদেশ পুনর্গঠনে সেই যুবশক্তিকে সম্পৃক্ত করার অভীষ্ট লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি’র নেতৃত্বে এই সংগঠনের জন্ম। জন্মলগ্ন থেকেই যুবলীগ আত্মনিয়োগ করে দেশ গঠনে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে জাতি যখন শোষণহীন-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে নিয়োজিত, তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে। হত্যা করা হয় যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি’কে। শুরু হয় হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। এ সংগঠনের নেতা কর্মীরা সাহসী প্রতিবাদ জানায়। চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা মৌলভি সৈয়দ আহমদ ও বগুড়ার আবদুল খালেক খসরুসহ অনেক যুবলীগ নেতা-কর্মী সেসময় জীবন দিয়েছেন। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে যুবলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ’৭৫ পরবর্তী যুবলীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ডে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত প্রায় ১৪ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি খাতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই যুবশক্তি। যুব সমাজের আছে অমিত সম্ভাবনা ও সতেজ উদ্যম।

যুবশক্তিই পারে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে। বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়ে আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করে, উদ্বাস্তু মানুষের জন্য ঘর নির্মাণ করে, কৃষকের ধান কেটে এবং ফ্রি মেডিকেল সেবা দিয়ে মানবিকতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।